মজার গাণিতিক হিসাব

আসুন, গণিতের একটি সহজ উপায় শিখি। অনেক সহজেই আমরা এককের ঘরে ৫ সম্বলিত যে কোন সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করতে পারব।
যে সংখ্যার এককের ঘরে ৫ আছে সে সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করার জন্য বর্গ ফলের একক এবং দশকের দুই ঘরে ৫-এর বর্গ ২৫ লিখতে হবে । তারপর ৫ বাদে ঐ সংখ্যাটির যা থাকে তার সাথে এর পরবর্তী ক্রমিক সংখ্যার গুণফল ২৫ এর বাঁদিকে লিখলেই উক্ত সংখ্যার বর্গ পাওয়া যাবে ।

যেমন আমরা ৭৫ এর বর্গ নির্ণয় করব । সেজন্য বর্গ ফলের একক এবং দশকের দুই ঘরে ৫-এর বর্গ ২৫ লিখতে হবে । তারপর ৭৫ থেকে ৫ বাদ দিলে থাকে ৭ । ৭ এর পরবর্তী ক্রমিক সংখ্যা হল ৮ । এখন ৭×৮=৫৬ ।এবার ৫৬ কে ২৫ এর বাঁদিকে লিখলেই ৭৫-এর বর্গ পাওয়া যাবে । সুতরাং ৭৫ এর বর্গ হল ৫৬২৫ ।

একই ভাবে :

৮৫ এর বর্গ = ৭২২৫

৯৫ এর বর্গ = ৯০২৫

১০৫ এর বর্গ = ১১০২৫

এই রকমের সংখ্যাকে (10a+5) আকারেও লেখা যায়। (এখানে 'a' যেকোন অঋণাত্মক পূ্র্ণসংখ্যা)।
সুতরাং (10a+5)^2 =100a^2+100a+25

=100a(a+1)+25

সুতরাং a(a+1) এর গুণফল বসবে একক ও দশক বাদ দিয়ে শতকের ঘর থেকে। একক ও দশকে 25 বসবে।

Are we alone in the universe? এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পর্ব :১

মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধান নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক  কৌতূহল । এলিয়েন’র খোঁজ শুরু করছেন বিজ্ঞানীরা ,তা-ও আবার ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে?

কিন্তু আদৌ কি আমরা ছাড়া কেউ আছে?
এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? 
এই নিয়ে আমরা প্রথমে দুইটা তত্ত্ব  নিয়ে আলোচনা করবো

১) ফার্মি প্যারাডক্স
২) ড্রেকের সূত্র

ফার্মি প্যারাডক্স: ফার্মির প্যারাডক্স/হেঁয়ালি হল বহির্জাগতিক সভ্যতা থাকার উচ্চ সম্ভাবনার বিপরীতে
আপাতদৃষ্টিতে এর কোন নিদর্শন না পাবার, অথবা ভিন্ন কোন সভ্যতার সাথে মানুষের
যোগাযোগ না হবার হেঁয়ালি।
মহাবিশ্বের বয়স এবং এতে অবস্থিত বিপুল পরিমাণ তারকারাজির সংখ্যা নির্দেশ
করে যে, পৃথিবীর মতো গ্রহ যদি
সাধারণ হয়, তবে বহির্বিশ্বিক প্রাণও তেমনই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। ১৯৫০ সালে
পদার্থবিদ এনরিকো ফার্মি একবার কথায় কথায় মন্তব্য করেন,

"""মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে
প্রাণ যদি এতই সহজলভ্য হবে, তবে
কেন এখনো কোন গ্রহান্তরের
মহাকাশযান অথবা স্পেসপ্রোব
দেখা যায় নি"""

এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা শুরু হয় যখন
১৯৭৫ সালে মাইকেল এইচ. হার্ট এর ওপর একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেনযা ফার্মি-হার্ট হেঁয়ালি
নামে পরিচিত।এরকম আরো একটি আলোচিত বিষয় হল অসীম নিস্তব্ধতা —

""""যদি ভ্রমণ
অপেক্ষাকৃত কঠিন হয়ও, কিন্তু
প্রাণ তো আছে, তবে কেন আমরা
কখনোই পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমান
প্রাণীদের কোন রেডিও
ট্রান্সমিশন ধরতে পারিনি?"""

হার্টের মতানুসারে, এখন পর্যন্ত বহির্বিশ্বিক প্রাণ এবং এর সম্ভাব্য বিভিন্ন মডেল নিয়ে
প্রচুর বৈজ্ঞানিক ধারণা তৈরি করা হয়েছে, এবং ফার্মি হেঁয়ালি এ সংক্রান্ত কাজের
প্রসঙ্গ কাঠামোয় পরিণত হয়েছে। নানান বুদ্ধিবৃত্তিক গবেষণায় এ হেঁয়ালি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান,
জীববিজ্ঞান, বাস্তুবিজ্ঞান এবং দর্শন ইত্যাদি বহুমুখী শাখায় এ নিয়ে অনুসন্ধান উস্কে
দিয়েছে। জ্যোতিঃজীববিজ্ঞান নামক
একটি নতুন শাখায় ফার্মি প্যারাডক্স এবং পৃথিবীর বাইরের প্রাণের সম্ভাবনা সংক্রান্ত আন্তঃবৈষয়িক গবেষণা হচ্ছে।

প্যারাডক্স এর ভিত্তি : ফার্মি হেঁয়ালি হল স্কেল এবং সম্ভাব্যতা ও প্রমাণের অভাবের
মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলাফল। এর পূর্ণতর সংজ্ঞা এভাবে দেওয়া যেতে পারে:

"""মহাবিশ্বের আকার এবং বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে বহু
সংখ্যক উন্নত বহির্জাগতিক প্রাণের সম্ভাব্য উপস্থিতি। কিন্তু এই ধারণা অযুক্তিযুক্ত
প্রতীয়মান হয়, কারণ পর্যবেক্ষণগত ফলাফল তা সমর্থন করে না।"""

হেঁয়ালিটির প্রথম বিষয়টি হল "আকারের যুক্তি", যার সাথে কিনা বিশাল সব সংখ্যা জড়িত:
আকাশগঙ্গা ছায়াপথে প্রায় ২৫০
বিলিয়ন (২৫,০০০ কোটি বা ১০ ১১ ) এবং দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ৭০ সেক্সটিলিয়ন (৭ x ১০ ২২) তারকা আছে। যদি এসব তারার
চারপাশে ঘূর্ণায়মান গ্রহসমূহের অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকে তবে
কেবল আকাশগঙ্গা ছায়াপথেই বিপুল সংখ্যক সভ্যতা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ যুক্তিতে
ধরে নেয়া হয়েছে পৃথিবী কোন বিশেষ গ্রহ নয়, বরং এটি অন্যান্য সব গ্রহের মতোই সাধারণ।

ড্রেকের সূত্র :

ডঃ ফ্রাঙ্ক ড্রেক ,যিনি এই সূত্রটি প্রবর্তন করেন,
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার একজন
অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ১৯৬০-এর
দশকে বহির্জাগতিক যেসকল সভ্যতাসমূহের সাথে আমাদের যোগাযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা
রয়েছে সেগুলোর সংখ্যা প্রণয়নের জন্য এই সূত্রটির অবতারণা করেন। এই সূত্রটির
প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে
নিয়ামকসমূহ বহির্জাগতিক সভ্যতাসমূহের সংখ্যা নির্ণয়ে ভূমিকা রাখে সেই নিয়ামকগুলোর অনিশ্চয়তার পরিমাণ নির্ণয়ে
বিজ্ঞানীদেরকে সহায়তা করা। বর্তমানকালে বিরল পৃথিবী প্রকল্প বা Rare Earth Hypothesis নামীয় তত্ত্ব যা অনুসারে মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান জীবের অস্তিত্ব খুবই বিরল, ড্রেকের তত্ত্বের একটি অন্যতম খন্ডনকারী।

ড্রেকের সূত্র ফার্মি প্যারাডক্সের সাথে
নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। জিন রডেনবারি তার স্টার ট্রেক নামক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে
মহাজাগতিক যুদ্ধে লিপ্ত সভ্যতার প্রদর্শনের মাধ্যমে এই সূত্রের একটি প্রামাণ্য চিত্র
উপস্থাপন করেন।

সূত্র :

N = R*. fp. ne.fl.fi.fc.L

যেখানে:
N - হল আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অন্তর্ভুক্ত সেই সকল সভ্যতাসমূহ যাদের দ্বারা প্রেরিত
তাড়িতচৌম্বক নিঃসরণগুলো চিহ্নিত করা যায়। এর ফলে তাদের সাথে আমাদের
যোগাযোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এবং

R* - হল বুদ্ধিমান প্রাণের উৎপত্তির জন্য অনুকূল পরিবেশ বিশিষ্ট তারাসমূহ সংগঠনের
হার।

fp - হল সেই সকল তারার ভগ্নাংশ (শতকরা অংশ বা পারসেন্টেজ) যাদের একটি
গ্রহ ব্যবস্থা রয়েছে।

n e - হল, যে সকল তারার গ্রহব্যবস্থা রয়েছে সে সকলতারাপ্রতি গ্রহসমূহের সংখ্যা যাতে জীবন সৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

fl - যে সকল গ্রহে জীবন সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ থাকার কারণে সত্যিই প্রাণের আবির্ভাব
ঘটেছে তাদের ভগ্নাংশ (শতকরা অংশ বা পারসেন্টেজ)।

fi - সে সকল প্রাণশীল গ্রহসংখ্যার ভগ্নাংশ (শতকরা অংশ বা পারসেন্টেজ) যে সকল
গ্রহের উপর বুদ্ধিমান প্রাণীর
বিচরণ রয়েছে।

fc - সে সকল প্রাণশীল গ্রহসংখ্যার ভগ্নাংশ (শতকরা অংশ বা পারসেন্টেজ) যে সকল
গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীরাপ্রযুক্তির এতোটুকু উন্নয়ন ঘটিয়েছে যা দ্বারা মহাকাশে সংকেত পাঠানোর
মাধ্যমে তারা নিজেদেরউপস্থিতির কথা জানান
দিতে পারে।

L - হল সে সময়কাল যে সময়কাল ধরে সেই বুদ্ধিমান প্রাণীরা তাদের উপস্থিতির প্রমাণস্বরুপ
নির্ণয়যোগ্য সংকেত পাঠাতে পারে।

চলবে........................

Reference :  equetion of ড্রেক
              
Frank Drake (December ২০০৪)। "The E.T.
Equation, Recalculated"
 

Preprint by Lineweaver and Davis estimating f l
as > 0.13

গল্পে গল্পে বিন্যাস : বিনি পয়সায় ভোজ

দশজন তরুন তাদের মাধ্যমিক স্কুল থেকে পাশ করে বেরুনো উপলক্ষে, একটা রেস্তোরায়য় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করার প্লান করল।

একসাথে জড়ো হবার পর  প্রথম পদটি যখন
পরিবেশন করা হলো  তখন তারা কে কোন চেয়ারে বসবে তাই নিয়ে তর্ক শুরু করে দিলো।

কেউ প্রস্তাব করলো নামের অদ্যাক্ষর অনুযায়ী বসা হোক , কেউ আবার বলল বয়স অনুসারে
কেউ বলল উচ্চতা অনুসারে.......

তর্ক চলছে তো চলছেই.......

খাবার জুড়িয়ে যাচ্ছে তবু কেউ বসতে রাজি না
তখন ওয়েটার এসে সমস্যা সমাধান করে দিলো।

"শুনুন তরুন বন্ধুরা " বলল সে "যে যেখানে আছেন বসুন দেখি। 
আমি যা বলি শুনুন "

তরুণ রা তার কথা মেনে নিলো

ওয়েটার তখন বলল  " আপনাদের কেউ একজন এখন আপনারা যে ক্রমানুযায়ী বসেছেন
সেটা লিখে রাখুন। কাল আবার এসে ভিন্ন কোন ক্রমানুযায়ী বসবেন। এবং যত দিন না বসবার
এ সমস্ত রকম এর বিন্যাস শেষ হয়ে যাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এভাবে চলুক। তার পর আপনারা এখন যে ক্রমানুসারে বসেছেন আবার ঠিক এভাবে বসার পালা যেদিন আসবে সেদিন আপনাদের ইচ্ছে মতো যে কোন সুখাদ্য আমি আপনাদের বিনামূল্যে পরিশেবন করবো বলে আমি প্রতিজ্ঞা করছি। "

প্রস্তাব টা লোভনীয় এবং প্রতিদিন সবাই  এ রেস্তোরা তে এসে টেবিল কে ঘিরে সমস্ত সম্ভাব্য
উপায় যাচাই করতে লাগলো....

এখন প্রশ্ন হলো ঠীক কত দিন পর তারা সেই দিন ফিরে পাবে...???

...... চিন্তা করতে থাকুন..............

.................

................

............চিন্তা

...... চিন্তা

সমাধান আসলে সেই দিন টি কোন দিন ই ফিরে আসে নি........

এবং সেটা এই কারণে নয় যে ওয়েটার  তার কথা রাখতে পারেন নি.....

সেটা এই কারণে যে দশ জন লোকের পক্ষে ভিন্ন ভিন্ন বিন্যাস অনুযায়ী টেবিল এ বসার সংখ্যাটা অনেক বেশী...
বাস্তবিক পক্ষে, ৩৬২৮৮০০ বার ভিন্ন ভিন্ন বসা যায়...

এবং এই এতো বার বসতে হলে প্রায় ১০০০০ বছর লেগে যাবে.......!!!!!!!!

দশ জন লোকের টেবিলে বসার যে এতোগুলো উপায় আছে সেটা মনে হয় আপনার trust হচ্ছে না?

ব্যাপার টা যতদূর সম্ভব সহযে বুঝার জন্য তিনটি জিনিছ দিয়ে শুরু করা যাক। A B C.
এই জিনিছ গুলো কে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সাজিয়ে রাখা যায় সেটাই আমরা বের করতে চাচ্ছি।
প্রথমে C কে সরিয়ে আমরা মাত্র ২ টি জিনিছ ধরছি। দেখতে পাবো এ দুটি জিনিছ কে সংস্থাপন করা যায়...

এবার প্রত্যেক জোড়ার সাথে C যোগ করা যাক।
ভিন্ন ভিন্ন ৩ রকম ভাবে আমরা তা করতে পারি।
আমরা C কে বসাতে পারি

১- জোড়াটির পিছনে
২- জোড়াটির সামনে
এবং
৩ - জোড়াটির মাঝখানে।

দেখাই যাচ্ছে C কে বসানোর আর জায়গা নেই।
এখন আমাদের জোড়া রয়েছে AB & BC সেহেতু আমরা জিনিস গুলো কে 2 X 3 =6 রকমে সাজাতে পারি

এবার আমরা ৪ টি জিনিস নিয়ে A B C & D
আপাতত আমরা D. কে সরিয়ে বাকি ৩ টি জিনিস কে কত রকমে সাজাতে পারি?

আমরা আগেই জেনেছি যে ৬ রকমে করা যায়

এখন D কে যোগ করে D আমরা বসাতে পারি

১- ৩টি জিনিসে পিছনে
২ - তাদের সামনে
৩- ১ম ও ২য় জিনিসের মাঝখানে
৪- ২য় ও ৩য় জিনিসের মাঝখানে

অতএব আমরা পাচ্ছি ৬ X 4 = 24 টি বিন্যাস পাচ্ছি.....

যেহেতু ৬= ২ X ৩,  ২ = ১ X ২
অতএব লেখা যায় 1 X 2 X 3 X 4 = 24

আমরা ৫ এর বেলায় পাচ্ছি

1 x 2 x 3 x 4x 5 = 120

৭ এর বেলায় ৭২০
১০ এর বেলায় ৩৬২৮৮০০

হিসেবটা আরো জটিল হয়ে দাড়াতো যদি এ তরূণ বয়সীদের অর্ধেক মেয়ে হতো এবং তারা পাশাপাশি বসতে চাই তো
যদিও বিন্যাস সংখ্যা কম কিন্তু বের করা খুবই কঠীন....  আপনারা বের করুন পারলে......

ধরা যাক একটি ক্লাস রুমে ২৫ জন ছাত্র রয়েছে
কতরকম ভাবে আমরা তাদের বসাতে পারি?
১x 2 x...........  x 2 ৫

গণিত আমাদের বিভিন্ন অংকের হিসেবকে সরল
করে নেবার পদ্ধতি শিখিয়েছে কিন্তু উপরের
অংক টি কষে সরল করার কোন সুযোগ নেই
এই গুনফল টি এতই বিশাল যে এটা স্তম্বিত করে দেওয়াত মতো

১৫৫১১২১০০৪৩৩৩০৯৮৫৯৮৪০০০০০০

[problem source : Mathematics can be fun -ya. perelman ]
....

শাওন সিকদার
Administer
বিজ্ঞান প্লাস গণিত

রাম না জম্নাতেই রামায়ন : সংখ্যা না দেখেই যোগ করে তাক লাগিয়ে দিন সবাইকে

যে সংখ্যা গুলো এখনো লেখা হয় নি তাদের যোগফল কি লেখা সম্ভব?

আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব হলেও অংকের  কৌশলে তাও সম্ভব হতে পারে। অংকের এ
খেলা দেখিয়ে তুমি তুমার বন্ধুদের তাক
লাগিয়ে দিতে পারো।

কিভাবে করবে :-

তোমার কয়েক জন বন্ধুকে ডেকে এনে তাদের একজন কে বোর্ডের উপর একটি ৫ অংকের সংখ্যা লিখতে বলো।

এবার, তুমার বন্ধুদের বলবে যে, এর নিচে আমরা
আরো ৪ টি ৫ অংকের সংখ্যা লিখবো তার
মধ্যে দুটি দেবে তুমরআ আর দুটি দেব আমি ।

তুমার বন্ধু যে ১ম সংখ্যাটি লিখবে তখনই তুমি
আর ৪ সংখ্যা লেখার আগেই ওই ৫ টি সংখ্যা র
যোগ ফল খাতায় লিখে ফেলবে (কিভাবে পারবে সেটা পরে বলছি) এবং শেষ বন্ধু দের সব
গুলো সংখ্যা যোগ করতে বলবে।

এর পর তুমার বন্ধুকে বলবে যে দেখো আমি আগেই তুমাদের যোগফল লিখে রেখেছি।

হ্যা সত্যিই তুমার বন্ধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকবে কিভাবে এটা সম্ভব??

চলো এবার দেখা যাক কিভাবে করবো

ধরো তুমার ১ম বন্ধু ৫ অংকের একটি সংখ্যা লিখলো  - ৭৪৩২৫

তুমি এখনি তুমার খাতার মধ্যে আরো যে ৪ টি
সংখ্যা লেখাই হয়নি সেটার যোগফল লিখে
ফেলতে পারো।
তুমাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো তুমার ১ম
বন্ধুর লেখা সংখ্যা টার সামনে ২ বসাও মানে
২৭৪৩২৫, এর পর ২ বিয়োগ করো মানে
২৭৪৩২৩....  হ্যা এই সংখ্যাটিই তুমাকে
খাতায় লিখতে হবে।

এরপর, তুমার ২য় বন্ধু কে একটা সংখ্য দিতে
বলবে। ২য় বন্ধু সংখ্যা দেওয়ার পর। ৩য় সংখ্যাটি তুমি দিবে।
এখানে উল্লেখ করি যে তুমার বন্ধু যেমন খুশি
তেমন সংখ্যা দিতে পারে কিন্তু তুমি তার নিচের
সংখ্যাটি এমনভাবে লিখবে যেন তার সাথে তুমার সংখ্যার প্রতি অংকের যোগফল ৯ হয়
মানে তুমার ২য় বন্ধু যদি লেখে ৫৭৪৯১(ধরি)

তাহলে তুমি লিখবে ৪২৫০৮। মানে তুমার সংখ্যা আর ২য় বন্ধুর লেখার যোগফল যেন ৯৯৯৯৯ হয়।

এভাবে ৩য় বন্ধু কে ৪র্থ সংখ্যাটি লিখতে বলো
এবং ৫ম সংখ্যাটি লিখবে তুমি। এখন বন্ধুদের
কে যোগফল বের করে বলো দেখবে যোগ ফল
তুমার প্রথম বন্ধুর লেখা সংখ্যার সামনে ২ বসিয়ে মানে
২৭৪৩২৫, এর পর ২ বিয়োগ করো মানে
২৭৪৩২৩....  হ্যা এই সংখ্যাটিই তুমি যেটি খাতায় লিখেছিলে।

যাচাই করে দেখো

১ম সংখ্যা (বন্ধুর লেখা) -৭৪৩২৫
২য় সংখ্যা (২য় বন্ধুর লেখা)-       ৫৭৪৯১(যেকোন সংখ্যা হতে পারে)
৩য় সংখ্যা (তুমার লেখা) -৪২৫০৮(ম্যাচিং)
৪র্থ সংখ্যা (৩য় বন্ধুর লেখা)  -৬৪৫২৯ (যেকোন সংখ্যা হতে পারে)

৫ম সংখ্যা  (তুমার লেখা) - ৩৫৪৭০(ম্যাচিং সংখ্যা)

এবার যোগ করে দেখো.... 

এটা ৭ লাইন বা ৯ লাইন এর জন্য ও সত্য।
৭ লাইন এর জন্য ৩ সামনে রেখে ৩ বিয়োগ করতে হবে.....

কেন হয় এর কম...  দেখো খুজে পাও কিনা?
না পেলে পরে বুঝিয়ে বলব

তো শুভ হোক তুমাদের ভেলকিবাজি

শাওন সিকদার

ক্যালেন্ডার গণনা : সহযেই বের করুন ছোট একটা ট্রীক এর মাধ্যমে

আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছে যারা ক্যালেন্ডার না দেখেই বলতে পারে কোন তারিখ কি বার!! তাদের সেই লুকোনো বিদ্যা এবার আপনিও জেনে নিন ৷

শুরুতে সপ্তাহের দিনগুলোকে সিরিয়ালি নাম্বারাইজ করি:

শুক্রবার এর জন্য ০
শনিবার এর জন্য ১
রবিবার এর জন্য ২.....এভাবে বৃহস্পতিবার এর জন্য ৬ ৷

এবার আপনাকে যা করতে হবে এই বছরের জন্য নিচের মান গুলো মনে রাখতে হবে:

জানুয়ারী - ৫

ফেব্রুয়ারী- ১

মার্চ- ১

এপ্রিল- ৪

মে- ৬

জুন- ২

জুলাই- ৪

আগস্ট- ০

সেপ্টেম্বর- ৩

অক্টোবর- ৫

নভেম্বর- ১

ডিসেম্বর- ৩

এখন আপনাকে যদি ২০১৫ সালের অমুক মাসের অমুক তারিখে কি বার পড়ে তা বের করতে বলা হয় , তাহলে ঐ মাস সংশ্লিষ্ট সংখ্যাকে(উপরে প্রদত্ত) উক্ত তারিখের সাথে যোগ করে নিবেন । এরপর যোগফলকে ৭ দিয়ে ভাগ দিবেন । ভাগ দেয়ার পরে যত সংখ্যা ভাগশেষ থাকবে , তত নাম্বার দিনটিই ঐ তারিখের বার!!! 

যেমন— আপনাকে যদি বলা হয় মে মাসের ১২ তারিখ কি ?? 
তাহলে এই ১২ তারিখের সাথে যোগ করুন মে মাস সংশ্লিষ্ট সংখ্যা ৬ (উপরে দেয়া) । ১২+৬=১৮। এই কে ৭ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ ৪ ই থাকে। আর ৪ নাম্বার দিন হল মঙ্গলবার (হুম আজকেই  ) ৷

প্রশ্ন হল, এই মাস সংশ্লিষ্ট সংখ্যা কিভাবে বের করা হল: 

☞২০১৫ সালের ক্যালেন্ডার হাতে নিন।

☞দেখুন জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনটি বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৬ নম্বর দিন। ১ এর সাথে যত যোগ করলে উক্ত মাসের প্রথম দিনটির নম্বর পাওয়া যায় তত সংখ্যাই ঐ মাস সংশ্লিষ্ট সংখ্যা। অর্থাৎ এই বছরের জানুয়ারির জন্য তা ৫ ৷ (কেবলমাত্র যোগফল ৭ হলে তার মান ০ ধরে নিতে হবে, যা শুক্রবার এর মান সংখ্যা) ৷৷ 

‪#‎Deep_Tea‬
SCI-TECH infinity

রহস্যময় ফার্মেট থিওরি

গনিতের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত থিওরি হল ফার্মেটের লাস্ট থিওরি। শুধুমাত্র এই একটি থিওরি প্রমান করতে গিয়ে গত ৩শ বছরেরও বেশী সময় ধরে পৃথিবীর সেরা সেরা গণিতবিদেরা অক্লান্ত গবেষণা করে গেছেন। তাদের মধ্যে একজন ছাড়া কেউ ফার্মেটের লাস্ট থিওরি প্রমান করে যেতে পারেন নি। কেউ আবার ঐ থিওরিকে ভুল প্রমানে চেষ্টা করে গেছেন। শুধুমাত্র ঐ থিওরি প্রমান করতে গিয়ে আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন জার্মান গনিতবিদ পল উলফসকেহল। তিনি ছিলেন কারখানার মালিক এবং একই সাথে গনিতের এক নিভৃত সেবক। ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে তিনি ফার্মেটের লাস্ট থিওরি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। অনেক চেষ্টা করেও তিনি যখন ব্যর্থ হলেন তখন হতাশায় ভেংগে পড়লেন। হতাশা এবং ব্যর্থতা থেকে মুক্তি পেতে তিনি আত্নহত্যার পথ বেছে নেন। আত্নহত্যার জন্য তিনি দিন ক্ষন ঠিক করলেন। ঠিক করলেন রাত ১২ টায় তিনি আত্নহত্যা করবেন। অবশেষে চলে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষন। কিন্তু ১২টার কয়েক মিনিট আগে তার মাথায় খেয়াল আসে আর একবার চেষ্টা করে দেখা যাক প্রমান করা যায় কিনা। অমনি লাইব্রেরিতে গিয়ে ফার্মেটের লাস্ট থিওরি নিয়ে  তখন পর্যন্ত যত গবেষনা করেছেন সেগুলোতে চোখ বুলানো শুরু করলেন। হঠাৎ থিওরি প্রমানের একটি উপায় পেয়ে গেলেন।  সংগে সংগে সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগে তিনি নতুন কৌশল নিয়ে ভাবতে বসে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হন। তার মানে এখন তাকে আত্নহত্যা করতে হবে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সব কিছু দেখে নিলেন। এই সাজানো পৃথিবী ছেড়ে তাকে চলে যেতে হবে একজন ব্যর্থ গনিতবিদ হিসেবে। বিষন্ন মন নিয়ে টেবিল ছেড়ে আত্নহত্যার প্রস্তুতি নিলেন।  মাথায় পিস্তল তাক করে টিগারে আংগুল বসান। মাত্র একটি টিপ দিলেই ঘটে যাবে সমস্ত লেন্দেনের হিসাব। ব্যর্থ গনিতবিদ বলে তাকে আর কেউ অভিহিত করবে না। তিনি ফার্মেটের লাস্ট থিওরির কাছে আত্ন সমর্পণ করে চলে যাবেন চিরতরে। দেখে নিলেন ব্যর্থতার কালিমা লেপা এই পৃথিবীতে আর কতক্ষণ তিনি বেচে আছেন। কিন্তু ততক্ষনে সময় পেরিয়ে গেছে মধ্যরাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে। আত্নহত্যার লগন পেরিয়ে গেছে। এখন কি করা!! অনেক ভেবে চিন্তে যখন উপায় পেলেন না তখন লগন পেরিয়ে যাওয়ায় আত্নহত্যার পরিকল্পনা বাদ দিলেন। বেচে গেল একটা জীবন। কিন্তু ফার্মেটের লাস্ট থিওরি প্রমানের ব্যর্থতার দায়মুক্তির জন্য তিনি একটা উইল করে যান এবং যিনি ভবিষ্যতে ঐ থিওরি প্রমান করতে পারবেন তার পুরষ্কার হিসেবে রেখে যান এক লাখ ডয়েস মার্ক( যা বর্তমানে ২০ লাখ ডলারের সমতূল্য)। পল উলফসকেহল ১৯০৬ সালে মারা যাওয়ার পর ঘোষনা করা হয় উলফসকেহল প্রাইজ। বলা হয় যিনি ঐ থিওরি প্রমান করতে পারবেন তিনি এই প্রাইজ পাবেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার প্রথম বছরেই কমিটিতে ৬২১ জন গনিতবিদ তাদের প্রমান হাজির করেন। কিন্তু তার একটিও শেষ পর্যন্ত টিকেনি। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার গনিতবিদ আই সাভান্ত ফার্মেটের লাস্ট থিওরি ভুল প্রমানের চেষ্টা করেন।

ফার্মেটের লাস্ট থিওরি :সপ্তদশ শতকে ফ্রান্সে জম্মগ্রহন করেন পিয়েরে দে ফার্মেট। একদিকে তিনি ছিলেন টলুজ পার্লামেন্টের একজন সদস্য,অন্যদিকে তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা এক গণিতবিদ। তিনি তার এক বইয়ে একটি থিওরি উল্লেখ করেছেন,যার চেহারা অনেকটা পিথাগোরাসের উপপাদ্যের মত। পিথাগোরাসের উপপাদ্যটি হল,

                                                        x2+y2=z2

পিথাগোরাসের এই সূত্রটির যদি কেউ সমাধান জানতে চান -এ সমীকরণের অখন্ড সংখ্যার(ইনটিজার)সমাধান কি? তাহলে বেশ কিছু উত্তর পাওয়া সম্ভব। যেমন -

                                             32+42=52                                                                                                                           অথবা

                                            52+122=132

এভাবে অনেক সমাধান পাওয়া যেতে পারে। ফার্মেট এর পর থেকেই শুরু করেছেন। তিনি দ্বিমাত্রিক ঐ সমীকরনের দুই মাত্রার পরিবর্তে তিন মাত্রা ব্যবহার করেন। যা হল

                                              x3+y3=z3

এখানে ফার্মেট প্রশ্ন উত্থাপন করেন -আপনি কি এই সমীকরনের সমাধান বের করতে পারবেন? এখানেই তিনি শেষ করেন নি। এই সমীকরনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন -4,5,6,7,8,9,......n পর্যন্ত। ফলে ফার্মেটের সমীকরনের মূল চেহারা দাঁড়ায়-

                                                x3+y3=z3

                                               x4+y4=z4 

                                               x5+y5=z5

         ......................................................................................

        ......................................................................................

                                              xn+yn=zn

সব শেষে ফার্মেটের সূত্রকে বিবৃত করা হয়

                                              xn+yn=zn   এই আকারে ,যেখানে n>2.

এইটাই হল ফার্মেটের সেই লাস্ট থিওরি। ফার্মেট দাবী করে গেছেন এই সমীকরণটির কোন সমাধান নেই। তার এই দাবির পর সমীকরনটি পরিপূর্ণ প্রমান বা বা সমাধান আজও কোন গনিতবিদ দিতে পারেন নি। সমীকরণটি আবিষ্কারের পর কেটে গেছে ৩০০ বছরেরও বেশী। তারপরও এর সমাধান বের করতে না পারার কারণে পৃথিবীর গনিত ইতিহাসে এটি হয়ে আছে সবচেয়ে আলোচিত ,সব চেয়ে রহস্যময় এক সমীকরণ। ফার্মেটে যে বইয়ে তার লাস্ট থিওরি লিপিবদ্ধ করেছিলেন তার মার্জিনে লিখে গেছেন তার সমাধান। কিন্তু ঐ মার্জিনে লিখার মত জায়গা ছিল না।ফার্মেটের ভাষায়- এই প্রস্তাবনার চমৎকার একটি সমাধান আছে আমার কাছে। কিন্তু এই মার্জিন এত ছোট যে সেখানে লেখার মত জায়গা নেই।

এ কারনে ফার্মেট তার সেই চমৎকার প্রমান কোথাও লিখে যাননি। ফলে তার মৃত্যুর পর ইউরোপ সহ সারা পৃথিবীর গনিতবিদেরা উঠে পড়ে লাগে সেই থিওরি প্রমান করার জন্য। মূলত তখন থেকেই এর নাম হয়েছে "ফার্মেটের লাস্ট থিওরি"। সপ্তাদশ শতকের সেই থিওরি আজ গনিতের রহস্য হয়ে আছে। এখনও তা নিয়ে গবেষনা হচ্ছে। অনেক গনিতবিদ মনে করেন এর প্রমান সম্ভব না। তবে জর্জিয়ার গনিতবিদ আই সাভান্ত ফার্মেটের লাস্ট থিওরি তিন মাত্রা নিয়ে তার সমাধান বের করেছিলেন। এক রাতে তিনি ফার্মেটের থিওরি নিয়ে গভীর চিন্তা করতে করতে ত্রিমাত্রিক সমীকরনের সমাধান পেয়ে যান। এতে অনেকেই মনে করেছিলেন যে, এবার বুঝি ফার্মেটের লাস্ট থিওরি মিথ্যা প্রমান হতে চলেছে। আই সাভান্ত যে সমাধান বের করেছিলেন তা হচ্ছে এরকম-

                      643+943=1033 , যেখানে আইডিওভেরিফিকেশন 0.0000915%

তার এই সমাধানের উপর ভিক্তি করে আরও কতগুলো সমাধান বেরিয়ে এসেছে। যেমন-

                                     543+1613=1633

                                    713+1383=1443

                                    733+1443=1503

                                   1283+1883=2063

                                   1353+1383=1723

এছাড়াও ফার্মেটের সমীকরন n=4,5,6,7 পাওয়ার পর্যন্ত সমাধান পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এ পর্যন্ত যে সমীকরণ গুলোর সমাধান পাওয়া গেছে সেগুলো হল

                                     x3+y3=z3

                                     x4+y4=z4 

                                     x5+y5=z5

                                    x6+y6=z6

                                    x7+y7=z7

ইমরান হোসেন 

বর্গমুল  ব্লগ

ভালবাসা ও নিউরোসায়েন্স

ভালবাসা ও নিউরোসায়েন্স

লিখেছেন
মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ
অধ্যাপক
ফিলাডেলফিয়ায় থমাস জেকারসন বিশ্ববিদ্যালয়
ইউএসএ

আমরা যখন প্রেমে পড়ি, তখন মস্তিস্কের মধ্যে শুরু হয় নানা রকমের ক্রিয়াবিক্রিয়া। মস্তিকের
নিউরন কোষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে নানা
রকমের নিউরোহরমন বা নিউরোট্রান্সমিটার তৈরীতে যা সারা শরীরে ঝড় বইয়ে দেয়
মুহুর্তের মধ্যে। এই
নিউরোট্রান্সমিটার মস্তিস্কের
এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত বা শরীরের বিভিন্ন প্রান্তে বার্গ
পৌঁছে দেয় এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনে।

আমরা প্রিয়ার চোখের গভীরে
যখন তাকাই, মস্তিকের নির্দেশে
তৈরী হয় (advenaline) ) এড্রেনালিন নামক হরমন। ঘামতে থাকে হাতের
তালু, হার্ট চলতে থাকে ঝড়ের বেগে, ছোট হতে থাকে শ্বাস প্রশাস, চোখের দৃষ্টি হয় প্রসারিত। ঠিক তখনই মস্তিস্কের (amygdale)
এ্যামাইগডালা যা কিনা
আমাদের ইমশোনকে নিয়ন্ত্রণ করে তার কার্যক্ষমতা বহুগুনে বেড়ে
যায়, আমাদের রোমাঞ্চিত করে।
এমনই মুহুর্তে মস্তিস্কের (Pituitary)
পিটুইটারী তৈরী করে (Dopamine) ডোপামিন যা আমাদের হৃদয়ের
মধ্যে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেয়।
এরপর মস্তিস্কের (Hypothalamus)
হাইপোথালামাস তৈরী করে
(Oxytocin) অক্সিটোসিন নামক
নিউরোট্রান্সমিটার যা কিনা
প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে এক
ধরনের সেতু বন্ধন তৈরী করে দিয়ে
মায়ায় বেধে ফেলে। এই পুরো
ঘটনাটি ৯০ সেকেন্ড থেকে ৪
মিনিটে ঘটতে পারে।


মস্তিস্ক বিজ্ঞানীরা প্রেমে
পড়া এই মস্তিস্কের ক্রিয়া-
বিক্রিয়াকে তিন ভাগে ভাগ
করছেন।

প্রথম স্তর হচ্ছে
ভালালাগা। আমাদের সেক্স
হরমোন (Testosterone) টেস্টস্টেরন ও
(Estrogen) ইস্ট্রেজেন এর মাত্রা
শরীরে বেড়ে গিয়ে এই আবহ
তৈরী করে।

দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে মোহ। এই স্তরে
মস্তিস্কের নিউরন থেকে নিউরনে
বার্তা বহনকারী (Neurotransmitter)
তৈরী হয় তিন ধরনের। এরা হচ্ছে
(Adrenaline) এড্রেনালিন, (Dopamine)
ডোপামিন ও (Serotonin)
সেরোটোনিন আমরা হঠাৎ প্রেমে
পড়লে মস্তিস্কের নির্দেশে
তৈরী হওয়া Adrenaline আমাদের
হৃদস্পন্দনকে বাড়িয়ে দেয়, রক্তচাপ
বেড়ে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়। কিন্তু
এক ধরনের ভাললাগাবোধ তৈরী
হতে থাকে। আর এই ভাললাগাবোধ
তৈরী হয়, মস্তিস্কে পিটুইটারি এই
Dopamine তৈরী করে। Dopamine আমাদের
ভাললাগাবোধকে বহুগুনে
বাড়িয়ে দেয়। কোকেইন খেলেও
একই ধরনের অনুভুতি আমরা পাই। এই
স্তরে আর একটি পদার্থ তৈরী হয়
যার নাম সেরোটনিন। নতুন কোন
ভালবাসায় পড়লে সবসময় প্রিয়ার
কথা মাথায় আসে, তাকে সরানোই
যায়না। সেটা ঘটে এই এর মধ্য Serotonin
দিয়েই।

প্রেমে ৩য় স্তর হচ্ছে নির্ভরতা

প্রথম ও দ্বিতীয় স্তর অনেকটা
পাগলা তৃতীয় মী অথবা বলা যেতে
পারে ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণহীনতা।
ক্রমান্বয়ে ভালাবাসায় এক
নান্দনিক সুখ ও তৃপ্তি চলে এলে
পারস্পরিক আস্থা তৈরী হয়। তারপর
হয়ত বিয়ে বা সারাজীবনের জন্য
একসঙ্গে থাকা। এই আস্থা বা
নির্ভরতা তৈরী করতে যে দুটি
neurotransmitter বা নিউরন থেকে
নিউরনে বার্তা বহন কারী
পদার্থের অবদান তা হচ্ছে (Oxytocin)
অক্সিটসিন ও (Vasopressin)
ভেসোপ্রেসিন। মস্তিস্কের
পিটুইটারি এই Oxytocin তৈরী করে।
এটার ভূমিকা হচ্ছে প্রেমিক-
প্রেমিকার মধ্যে শক্তিশালী
মায়া তৈরী করা। ভালবাসার
মানুষকে যখন আমরা জড়িয়ে ধরি
বা স্পর্শ করি তখনই তৈরী হয় Oxytocin
যা দীর্ঘস্থায়ী বন্ধন তৈরী করে
দেয়। মা ও শিশুর মধ্যে যে বন্ধন
তাও নাকি এই Oxytocin এর অবদান।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা স্থায়ী
ভালবাসায় Vasopressin এর অবদান এর
কথাও বলেছেন, যদিও এটির প্রধান
কাজ কিডনির মাধ্যমে তৃষ্ণা বা
পিপাশা নিয়ন্ত্রণ করা।